বর্তমানে বিশ্বের প্রধান সমস্যা অসংক্রামক ব্যাধিসমূহ। এগুলোকে এখন অন্যতম ঘাতক ব্যাধি হিসেবে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের প্রতি তিনটি মৃত্যুর একটি হলো অসংক্রামক ব্যাধিতে মৃত্যু। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী ও ক্রমসম্প্রসারণশীল ব্যাধি।
হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনির জটিলতা, হরমোনের জটিলতা, ফুসফুসের সমস্যা, আঘাতজনিত সমস্যা—এসবই অসংক্রামক ব্যাধি।
২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপ থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশে যত মৃত্যু হয়, তার ৫৯ শতাংশ হয় অসংক্রামক ব্যাধির জন্য। এর মধ্যে ১৭ ভাগ হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকে, ১১ ভাগ ফুসফুসের জটিলতায়। ১০ ভাগ ক্যানসারে ও এককভাবে ডায়াবেটিসে ৩ ভাগ। অন্যান্য অসংক্রামক ব্যাধিতে মারা যায় ১৮ ভাগ।বাংলাদেশে অসংক্রামক ব্যাধির ঝুঁকিসমূহ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অসংক্রামক ব্যাধি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাবে। অসংক্রামক ব্যাধি কখনো নির্মূল করা যাবে না।
অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার কারণ :
অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের কায়িক পরিশ্রম কম। জীবনযাপনে নানামুখী চাপ বেড়ে গেছে এখন। আমরা পরিশ্রম করি কম। আমাদের লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস এই অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার জন্য প্রধান দায়ী। খাদ্যাভ্যাস আগে বাংলাদেশে যে রকম ছিল তার থেকে অনেক বদলে গেছে এখন। বর্তমান সময়ে ফাস্টফুড, রিচফুডসহ রাস্তার ধারের পোড়া তেলের খাবার আমাদের শরীরের যে ক্ষতি করে; সেটাই এই রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ। এর আরো কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রসার, বায়ু এবং ধুলাদূষণ, মানসিক চাপ এবং সড়ক দুর্ঘটনার প্রকোপকে। প্রতিবেদনে ক্যানসার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, স্থায়ী বক্ষব্যাধি, শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা, স্নায়ুবিক রোগগুলোকে অসংক্রামক রোগ বলা হয়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইল অবশ্যই বদলাতে হবে।
বিশিষ্ট চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধে বেশি জোর দেওয়া দরকার। জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।
তথ্যসূত্র : https://www.prothomalo.com/bangladesh/অসংক্রামক-ব্যাধি-পরিস্থিতি-প্রতিকার-ও-করণীয়
